প্র্যাকটিক্যাল: অশুদ্ধ সাধারণ ফিটকিরি (Alum) – এর পুনঃকেলাসন (Recrystallization of Common Alum)
Aim (উদ্দেশ্য):
এই পরীক্ষায় আমি অশুদ্ধ নমুনা থেকে সাধারণ ফিটকিরি (KAl(SO₄)₂·12H₂O) পুনঃস্ফুটন পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ স্ফটিক হিসেবে সংগ্রহ করেছি।
Theory (তত্ত্ব):
সাধারণ ফিটকিরি পানিতে বেশ দ্রবণীয়, বিশেষত গরম পানিতে আরও বেশি দ্রবণীয়। ঠান্ডা হলে দ্রবণীয়তা কমে যায়। তাই—
- গরম পানিতে অধিক দ্রবীভূত হবে,
- গরম অবস্থায় পরিস্রাবণ করলে অদ্রাব্য অশুদ্ধি দূর হবে,
- ঠান্ডা হলে বিশুদ্ধ বড় স্ফটিক তৈরি হবে।
স্ফটিকীকরণে প্রধান ধাপ হলো—
- দ্রবীভবন,
- পরিস্রাবণ,
- ঘনীভবন,
- ঠান্ডা হওয়া,
- স্ফটিক সংগ্রহ,
- শুকানো।
Requirements (যন্ত্রপাতি):
- ২৫০ mL বিকার
- ১৫০ mL পোর্সেলিন বেসিন
- কাচদণ্ড
- ফানেল
- ফিল্টার পেপার
- ধৌতি বোতল
- লৌহ-বলয়, ত্রিপদ স্ট্যান্ড
- বালিগাহ
- বুনসেন বার্নার/স্পিরিট ল্যাম্প
- ওয়াচ গ্লাস
- শোষক কাগজ ও শোষকাধার
Chemicals (দ্রব্যাদি):
- অশুদ্ধ আলম/ফিটকিরি — 10 g
- পাতিত জল – প্রয়োজনমতো
Procedure (পদ্ধতি):
(১) অশুদ্ধ ফিটকিরি দ্রবীভূত করলাম:
আমি ২৫০ mL বিকারে প্রায় ৫০ mL গরম জল রাখলাম। এরপর অল্প অল্প করে অশুদ্ধ ফিটকিরি যোগ করে গলাতে থাকলাম। কাচদণ্ড দিয়ে নাড়তে নাড়তে দেখলাম দ্রবণ ধীরে ধীরে স্বচ্ছ হচ্ছে।
(২) অদ্রাব্য অশুদ্ধি ফিল্টার করলাম:
গরম অবস্থায় দ্রবণটি ফানেল ও ফিল্টার পেপারের সাহায্যে পরিস্রাবণ করলাম। ফিল্টার পেপারে অদ্রাব্য অংশ রয়ে গেল। পরিস্রুত স্বচ্ছ দ্রবণ পোর্সেলিন বেসিনে রেখে দিলাম।
(৩) দ্রবণ ঘন করলাম:
পোর্সেলিন বেসিনটিকে বালিগাহের ওপর বসিয়ে নিচে ল্যাম্প জ্বালালাম। দ্রবণ ধীরে ধীরে ফুটতে লাগল। বাষ্পীভবনের ফলে প্রায় অর্ধেক দ্রবণ বাষ্প হয়ে উড়ে গেল।
আমি কাচদণ্ড দিয়ে পরীক্ষা করলাম – ডগায় ফোঁটা নিয়ে ফুঁ দিতেই সাদা দানা জমতে লাগল। অর্থাৎ কেলাসন বিন্দুতে পৌঁছেছি।
(৪) উত্তাপ বন্ধ করে শীতল করলাম:
বেসিনটি ঢেকে (ওয়াচ গ্লাস দিয়ে) রেখে ঠান্ডা হতে দিলাম। ধীরে ধীরে ঠান্ডা হলে দেখি – বড়, স্বচ্ছ, কাঁচের মতো ফিটকিরি কেলাস গঠিত হয়েছে।
(৫) স্ফটিক সংগ্রহ করলাম:
ফানেল ব্যবহার করে স্ফটিকগুলিকে পরিস্রাবণ করলাম। ধৌতি বোতল দিয়ে একটু ঠান্ডা জল ছিটিয়ে ধুয়ে নিলাম যাতে তলায় রয়ে যাওয়া অম্লীয় দ্রবণ দূর হয়।
(৬) স্ফটিক শুকালাম:
প্রাপ্ত ফিটকিরি স্ফটিক শোষক কাগজে রেখে জল শুষে নিলাম। তারপর শোষকাধারে রেখে সম্পূর্ণ শুকিয়ে ফেললাম।
(৭) সংরক্ষণ করলাম:
শুকনো স্ফটিক সেলোফেন কাগজে মুড়ে বা কর্কযুক্ত পরিষ্কার টেস্ট টিউবে ভরে লেবেল লাগিয়ে সংরক্ষণ করলাম।
Observation Table (পর্যবেক্ষণ সারণি):
| পর্যবেক্ষণ | মান |
|---|---|
| অশুদ্ধ ফিটকিরির ওজন | 10 g |
| দ্রবণ গরমে স্বচ্ছ হয়েছে | হ্যাঁ |
| ঠান্ডা হলে স্ফটিক তৈরি হয়েছে | হ্যাঁ |
| স্ফটিকের রঙ | স্বচ্ছ/সাদা |
| প্রাপ্ত বিশুদ্ধ ফিটকিরির গড় ওজন | 8.5 – 9.0 g |
Result (ফলাফল):
এই স্ফটিকীকরণ পরীক্ষায় আমি অশুদ্ধ ফিটকিরির নমুনা থেকে স্বচ্ছ, কাঁচের মতো বড় স্ফটিক পেয়েছি। অশুদ্ধ 10 g নমুনা থেকে প্রায় 8.5 – 9.0 g বিশুদ্ধ সাধারণ ফিটকিরি লাভ হয়েছে।
Precautions (সতর্কতা):
- সমস্ত পরিস্রাবণ অবশ্যই গরম অবস্থায় করতে হবে।
- দ্রবণ ধীরে ধীরে ঘন করতে হবে।
- দ্রুত ঠান্ডা করলে ছোট স্ফটিক হয়—ধীর শীতলকরণই ভালো।
- সব যন্ত্রপাতি পরিষ্কার ব্যবহার করতে হবে।
- উত্তাপ নিয়ন্ত্রণ করে দিতে হবে, অতিরিক্ত উষ্ণ করলে ফিটকিরি নষ্ট হতে পারে।
- স্ফটিককে ধোওয়ার সময় বেশি জল ব্যবহার করলে দ্রবীভূত হয়ে যাবে।