শিরোনাম : Study of Acidity of Fruit and Vegetable Juices
Aim (উদ্দেশ্য):
বিভিন্ন ফল ও সবজির রসের অম্লত্ব (acidity) পিএইচ মিটারের সাহায্যে নির্ধারণ করা। অর্থাৎ বিভিন্ন ফল ও সবজির রসের pH পরিমাপ করে তাদের স্বাদ অনুযায়ী (অম্লতা) তুলনা করা।
তত্ত্ব
যে দ্রবণে H⁺ আয়ন বেশি থাকে তা অম্লীয় এবং OH⁻ আয়ন বেশি থাকলে ক্ষারীয় বলে ধরা হয়। pH একটি স্কেল যা দ্রবণের অম্লতা-ক্ষারতা পরিমাপ করে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার বিশুদ্ধ পানির pH মান ৭, যা নিরপেক্ষ। pH ৭-এর নিচে মান হলে দ্রবণটি অম্লীয় এবং ৭-এর উপরে হলে ক্ষারীয়। pH মান কমে যত নিচে যাবে (0-এর দিকে) দ্রবণের অম্লত্ব তত বেশি এবং pH মান বাড়লে (14-এর দিকে) ক্ষারত্ব বাড়ে।
ফলমূল ও সবজিতে সাধারণত কার্বনিক, সাইট্রিক, অ্যাসকর্ভিক ইত্যাদি অর্গানিক অম্ল থাকে, তাই তাদের রস অম্লীয় (কম pH) হয়। সাধারণভাবে ফলের রস শাকসবজির তুলনায় বেশি টক (অধিক অম্লীয়) হয়। উদাহরণস্বরূপ, লেবুর রসে প্রচুর সাইট্রিক অ্যাসিড থাকায় এর pH খুব কম (প্রায় 2-3) হয়। অন্যদিকে শাকসবজিতে অম্লের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম, তাই তাদের রসের pH ৫-৭-এর কাছাকাছি থাকে।
পিএইচ মিটার একটি বৈদ্যুতিক পরিমাপ যন্ত্র যা দ্রবণের pH (অম্লতা বা ক্ষারতা) মাপতে ব্যবহৃত হয়। এতে একটি কাচের ইলেক্ট্রোড থাকে যা H⁺ আয়নের ক্রিয়াশীলতার উপর ভিত্তি করে বৈদ্যুতিক সংকেত সৃষ্টি করে এবং পরিমাপযন্ত্র (ডিজিটাল ডিসপ্লে) সেই অনুযায়ী pH মান দেখায়। পরীক্ষার আগে pH মিটারকে মানসম্মত বাফার দ্রবণে ক্যালিব্রেট করা হয় যাতে পরিমাপ সঠিক হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ
- বিভিন্ন ফল (লেবু, কমলা, আপেল, কলা, আনারস, তরমুজ, আঙুর, আম, জাম ইত্যাদি) এবং শাকসবজি (পালং শাক, আলু, বেগুন, শশা, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, বিট, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি)
- পিএইচ মিটার (pH মিটার) এবং সংযুক্ত গ্লাস ইলেক্ট্রোড
- মানসম্মত বাফার দ্রবণ (pH 7 এবং pH 4 এর স্ট্যান্ডার্ড দ্রবণ)
- কাঁচের বীচারের সেট (পিএইচ পরিমাপ, নমুনা সংগ্রহের জন্য)
- ব্লেন্ডার বা মড়মষল (ফল ও শাকসবজি মিহি করার জন্য)
- ফিল্টার পেপার বা তুলার কাপড় (রস ঝরাতে)
- ডিস্টিলড পানি (ইলেক্ট্রোড ধোওয়ার জন্য)
- গ্লাস রড (মিশ্রণের জন্য)
- টেস্ট টিউব/মাইক্রোপাইপেট (রস সংরক্ষণের জন্য)
- নোটবুক ও কলম (ডাটা নোট করার জন্য)
পদ্ধতি (Procedure):
- প্রস্তুতি করেছি:
পরীক্ষার পূর্বে আমি সমস্ত যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করেছি এবং pH মিটারকে pH ৭ ও pH ৪ বাফার দ্রবণের সাহায্যে ক্যালিব্রেট করেছি। - নমুনা সংগ্রহ করেছি:
আমি ১০টি ফল এবং ১০টি সবজি সংগ্রহ করে ছোট ছোট টুকরো করে তাদের নমুনা আলাদা লেবেল দিয়েছি। - রস তৈরি করেছি:
প্রতিটি নমুনা ব্লেন্ডারে পিষে তুলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে প্রায় ১০-১৫ ml রস পৃথক করেছি। - pH মেপেছি:
আমি প্রতিটি রসে pH মিটারের ইলেক্ট্রোড সাবধানে ডুবিয়ে রেখে রিডিং পড়ে খাতায় লিখেছি। প্রতিবার ইলেক্ট্রোড ডিস্টিলড পানিতে ধুয়ে আবার ব্যবহার করেছি। - সব নমুনা একে একে পরীক্ষা করেছি এবং শেষ হলে যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে রেখেছি।
পর্যবেক্ষণ সারণি (Observation Table):
ফলের রসের pH মান:
| ফলের নাম | pH মান |
|---|---|
| 1. লেবু | 2.6 |
| 2. কমলা | 3.8 |
| 3. টমেটো (ফল হিসেবে) | 4.6 |
| 4. আপেল | 3.8 |
| 5. কলা | 5.0 |
| 6. আনারস | 3.8 |
| 7. তরমুজ | 6.4 |
| 8. আঙুর | 4.0 |
| 9. আম | 4.2 |
| 10. জাম | 3.1 |
সবজির রসের pH মান:
| সবজির নাম | pH মান |
|---|---|
| 1. পালং শাক | 6.2 |
| 2. আলু | 5.6 |
| 3. বেগুন | 4.7 |
| 4. শসা | 5.4 |
| 5. গাজর | 6.0 |
| 6. ফুলকপি | 5.9 |
| 7. বাঁধাকপি | 5.5 |
| 8. পেঁয়াজ | 5.9 |
| 9. বিট | 5.2 |
| 10. ক্যাপসিকাম | 4.8 |
গণনা (Calculation):
আমি যেহেতু সরাসরি pH মিটার ব্যবহার করেছি, তাই কোনো গণনার প্রয়োজন পড়েনি।
তবে চাইলে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনত্ব হিসাব করা যায়।
যেমনঃ
pH = 2.3 হলে, [H+]=10−2.3 ≈ 5.0×10−3 mol/L
ফলাফল (Result):
আমি যেসব ফল ও সবজির রস পরীক্ষা করেছি, সবগুলোরই pH ৭-এর নিচে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সবগুলো রসই অম্লীয়।
- সবচেয়ে বেশি অম্লীয় ফল: লেবু (pH ~2.3)
- সবচেয়ে কম অম্লীয় ফল: কলার রস (pH ~5.0)
- সবজির মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি অম্লীয়: বেগুন ও ক্যাপসিকাম
- কম অম্লীয় সবজি: গাজর ও পালং শাক
সতর্কতা (Precautions):
- আমি pH মিটার ব্যবহারের আগে বাফার দ্রবণ দিয়ে ভালোভাবে ক্যালিব্রেট করেছি।
- প্রতিবার pH মাপার আগে ও পরে ইলেক্ট্রোড ধুয়ে পরিষ্কার করেছি।
- আমি নিশ্চিত হয়েছি যে রসের সঙ্গে অন্য দ্রবণ যেন না মেশে।
- পরীক্ষার পর pH মিটার ও ইলেক্ট্রোড যথাযথভাবে পরিষ্কার করে রেখেছি।
- নমুনা রস ভালোভাবে ছেঁকে পরিশ্রুত রেখেছি।
